লালমনিরহাট প্রতিনিধি
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রবাহে সৃষ্ট তাবদাহে অতিষ্ঠ লালমনিরহাটের জনজীবন। বিশেষ করে হতদরিদ্র-খেটে খাওয়া মানুষ ক্রমশ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি আগুন ঝরা বাতাসে নারী-শিশুসহ কর্মজীবী মানুষ দিন দিন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাট পাটগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন ও যাত্রীর সংখ্যা কম, জরুরি কাজ ছাড়া কেউ বাহিরে বের হচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদিতমারী কিসামত চন্দ্রপুর এলাকার মাঠে কাজ করা বয়োবৃদ্ধ কৃষক নুর আলম জানান, তীব্র তাপদাহে মাঠে থাকা যাচ্ছে না, রোদ আর গরমে আমাদের নাজেহাল অবস্থা। বাসচালক রমজান আলী জানান, গরমের কারণে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ (বিটুমিন) উঠে গাড়ির চাকার সাথে লেগে যাচ্ছে। এতে খুব সতর্ক অবস্থায় গাড়ী চালাতে হচ্ছে। ভ্যানচালক শরৎ বাবু জানান ‘প্রখর রোদের উত্তাপে মালামাল নিয়ে ভ্যান চালাতে কষ্ট হচ্ছে। তাই বিশ্রাম নিতে একটু শীতল জায়গা খুজছি,কোথাও ঠান্ডার আভাস নাই। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কর্মহীন হয়ে পড়বো। পরিবার পরিজনের মুখে দু’মুুঠো ভাত তুলে দিতে দুরুহ ব্যাপার হয়ে দাড়াবে। রিকশাচালক নির্মল রায় বলেন, ‘গত চার-পাঁচ দিন ধরে আয় রোজগার কমে গেছে। বেলা ১২টার পর শহরে কোনো যাত্রী থাকে না। লালমনিরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রমজান আলী জানান, প্রচণ্ড গরমে শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দৈনিক শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেলার প্রতিটি হাসপাতালে শিশু রোগী ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ, যথাসম্ভব বাহিরে বের না হওয়া,সাথে খাবার পানি রাখা,ছাতা ব্যবহারে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান বৃহস্পতিবার লালমনিরহাট কুড়িগ্রাম এর আশপাশের তাপমাত্রা ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।অপরনদিকে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। জেলা তথ্য অফিসার( অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহজাহান আলী জানান,লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে জেলার সর্বত্র সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে।